আনোয়ার হোসেন রকি, স্টাফ রিপোটার্স চট্টগ্রাম।
চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ড থানার বাইপাস সংলগ্ন টিএন্ডটি সড়কের পাশে ঘটে এই এই ঘটনা, গত ২৬ই জানুয়ারী রাত ১১:৩২ মিনিটের দিকে যমুনা কোম্পানির তেলের ভাউসার থেকে তেল নামানোর সময় আগুনের সূত্রপাত।
অবৈধ তেলের দোকানটির মালিকের নাম হৃদয়, তিনি বহুদিন যাবত দোকানটিতে অবৈধ তেল বেচাকেনা করে আসছেন, সে দিনও তিনি যমুনার ভাউসার থেকে তেল আনলোড করছিলেন, আকস্মিক সেখানে আগুন ধরে যায়, প্রাথমিক ভাবে সিগারেট থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে,আগুন লাগার পর থেকে গা ঢাকা দিয়েছেন অবৈধ তেলের ব্যবসায়ী হৃদয়। আসেপাশের দোকানদারের জিজ্ঞেস করলেও হৃদয়ের সঠিক পরিচয় কেউ দিতে পারেনি, কারো কাছেই তার কোন মোবাইল নাম্বারও নেই, কথা হয় দোকানের মূল মালিক শাকিলের সাথে, তার কাছেও হৃদয়ে নাম্বার নেই,তবে তিনি সংগ্রহ করে দিবেন বলে জানান, আজ ২৮ই জানুয়ারিতে সেই ধ্বংসস্তূপ এখন বলছে কতটা ভয়াবহ ছিল সেই রাত, একি সাথে পুড়েছে দুইটি ফার্নিচার দোকান,তিনটি চায়ের দোকান, একটি গুদাম সহ একটি ঝুটের দোকান, গতকাল সারা রাত বিভিন্ন সময় ঝুট ও ফার্নিচারের দোকান থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়, এখনো পুরোপুরি শঙ্কামুক্ত এমনটি নিশ্চিত করে বলা মুশকিল।
আজ দুপুরেরপর হৃদয়ের নাম্বার সংগ্রহ করার পর তাতে কল করলে নাম্বারটি সুইচ অফ পাওয়া যায়।
ফৌজদার হাট ক্যাডেট কলেজের পাশে তারা আরো একটি অবৈধ তেলের দোকানের খোঁজ পাওয়া যায়, ঐ দোকনটি তিনি রনি নামক আরেকজনের কাছ থেকে ভাড়ায় নিয়েছিলেন।
দোকান পরিদর্শন করলে দোকনটিতে কয়েকটি খালি ড্রাম ছাড়া আর কিছুই নজরে আসেনি।
সীতাকুণ্ড থানার পোর্ট কানেকাটিং রোড় থেকে শুরু করে সীতাকুণ্ড থানা পর্যন্ত এমন অসংখ্য অবৈধ তেলের দোকানের দেখা মিলবে। চট্টগ্রামের বেশিরভাগ মিডিয়াকর্মী তাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা গ্রহন করে আসেন, শুধু মিডিয়া ব্যক্তিই নয় প্রশাসনের অনেক ব্যক্তিও তাদের কাছ মাসিক চাঁদা গ্রহন করেন বলে অনেকেই জানান।
টনক নড়েছে প্রশাসনের, গতকাল থেকে বাইপাস সড়কে বেশির ভাগই অবৈধ তেলের দোকান সরজমিনে দেখতে গেলে অনেক দোকানই বন্ধ পাওয়া যায়, কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের অফিসার মামুন সাহেব বলেন এসব দোকান যেহেতু অবৈধ সেহেতু তাদের কাছে অগ্নিনিবারক কোন সরঞ্জাম নেই, তারা এসব দোকানের একটি তালিকা প্রস্তুত এর কাজ হাতে নিচ্ছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে দূর্ঘটনা ঘটার পরে সবার টনকনড়ে ওঠলো,এর আগে এসব কোথায় ছিল?
এখনো বিভিন্ন মিডিয়াকর্মী ক্ষতিগ্রস্তদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, অসহায় ব্যবসায়ীদের কিছুটা সহায়তার আশায় নিজেদের দিকেও নজর রাখার জন্য কলাকৌশল প্রয়োগ করে যাচ্ছেন।অথচ যেখানে মিডিয়াকর্মী অসহায় মানুষের পরম বন্ধু হয়ে লড়াই করার কথা।
আজ সকালে জেলা প্রশাসনের লোকজন এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছে, ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য তারা সরকারকে অবহিত করবেন বলে আশ্বস্ত করেন,পাশে পাশি অবৈধ তেলের দোকানদার হৃদয়কে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান।
ভয়াল সেই আগুনে পথে বসেছেন নবী এন্টারপ্রাইজ এর মালিক নবী, কামাল এন্টারপ্রাইজ এর নুর আলম, ওয়াজেদ এন্টারপ্রাইজ এর ফখরুল, আল-আমীন, কোরবান আলী,সাহেব আলী,ও মান্নান।
আগুনের পাশাপাশি চলে লুটের তান্ডব, কোরবান আলী, সাহেব আলী,মিরাজ স্টোর সহ একটি স্কার্ফ দোকান হতে মালামাল সরানের নামে চলে লুটের ঘটনাও, স্কার্ফ দোকান হতে প্রায় অর্ধের বেশি মাল লুট হয়েছে, তিনটি চায়ের দোকান হতে সিগারেট, কোমাল ড্রিংক সহ বিপুল পরিমাণ মালামাল লুটের মত ঘটনা ক্ষতিগ্রস্তদের হতবাক করেছে।
ধ্বংসস্তুপের মধ্যেও এখনো অনেক খুঁজে বেড়াচ্ছে তাদের হারানো স্মৃতিগুলো কে, এত বিশাল পরিমানের ক্ষতির ধাক্কাটা এই মন্দাগ্রস্ত অর্থনীতির মধ্যে টেইক ব্যাক করাটাই বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।