• মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ০৭:৪৯ অপরাহ্ন

সন্ত্রাসীর গুলিতে নিহত লবণ চাষী শফি আলম। মহেশখালীতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে লবণ চাষির মৃত্যু, এলাকাজুড়ে আতঙ্ক।

মোঃ আরফাত সিকদার / ২৫ Time View
Update : বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ, ২০২৫

 

 

স্টাফ রিপোর্টার আরাফাত সিকদার কক্সবাজার। 

 

কক্সবাজারের মহেশখালীর কালারমারছড়া ইউনিয়নের ছিকনিপাড়ার পশ্চিমে পদ্মবরো ছড়া এলাকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে  শফিল আলম (৩২) নামে এক লবণ চাষি নিহত হয়েছে।

 

বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে এই মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।

 

মহেশখালী-কুতুবদিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মানবেন্দ্র সরকার গণমাধ্যম কে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে এটি সন্ত্রাসী হামলা বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন ও আরও তদন্ত শেষে প্রকৃত কারণ জানা যাবে  এমনটাই জানান পুলিশ।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহেশখালীর কালারমারছড়া এলাকায় একটি সন্ত্রাসী বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে তৎপর রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই এলাকায় কোস্ট গার্ড সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করছিলেন। এ সময় কোস্ট গার্ডের ধাওয়া খেয়ে সন্ত্রাসীরা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পালানোর সময় তারা সন্দেহজনকভাবে লবণ চাষি শফিকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। গুলিটি তার বুকে বিদ্ধ হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

 

স্থানীয়দের দাবি, শফি কোনোভাবেই সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। তিনি একজন নিরীহ লবণ চাষি ছিলেন এবং পারিবারিক জীবনে সৎভাবে জীবনযাপন করছিলেন। তাদের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সন্ত্রাসীরা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

 

নিহতের ভাই মুহাম্মদ রাসেল বলেন, “আমি আর আমার ভাই শফি লবণ মাঠে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ দেখি কোস্ট গার্ড সদস্যরা কালারমারছড়ার একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ধাওয়া করছে। আমরা তখন নিরাপদে থাকার চেষ্টা করছিলাম। কিন্তু আমার ভাই পদ্মবরো ছড়ায় পৌঁছাতেই একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী তাকে টার্গেট করে গুলি ছোড়ে। কোনো কারণ ছাড়াই আমার ভাইকে হত্যা করা হলো। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

 

নিহতের বড় বোন ছেনোয়ারা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার ভাই কোনো অপরাধী ছিল না। সে দিনরাত পরিশ্রম করে আমাদের সংসার চালাতো। অথচ কিছু সন্ত্রাসী আমাদের সহায়-সম্পত্তি লুটে নেওয়ার জন্য তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করল। আমি প্রশাসনের কাছে আকুল আবেদন জানাই, আমার ভাইয়ের খুনিদের যেন দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়া হয়।

 

শফি হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পুরো এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। প্রতিবেশী মুহাম্মদ হামিদ বলেন, ‘শফি খুবই সহজ-সরল একজন লবণ চাষি ছিল। তার কোনো শত্রু ছিল না। অথচ সন্ত্রাসীরা তাকে হত্যা করল। এটি নিছক দুর্ঘটনা নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত অপরাধীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নিক।

 

স্থানীয় এক লবণচাষী বলেন, “মহেশখালীর অনেক জায়গায় সন্ত্রাসীরা আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে। সাধারণ মানুষ দিনদিন আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করছে। লবণ চাষিরা মাঠে যেতে ভয় পাচ্ছে। প্রশাসনের উচিত দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া, নয়তো আরও নিরীহ মানুষ প্রাণ হারাবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category